ঢাকা, শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪

জাবিতে ছাত্রকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার অভিযোগে দুই ছাত্রী বহিষ্কার

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) এক ছাত্রকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার অভিযোগে দুই ছাত্রীকে বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বহিষ্কৃতরা হলেন- নৃবিজ্ঞান বিভাগর ৪৬তম ব্যাচের সুমাইয়া বিনতে ইকরাম এবং তার বান্ধবী একই বিভাগের আনিকা তাবাসসুম মিম। সুমাইয়াকে এক বছর ও আনিকাকে ছয় মাসর জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।


মঙ্গলবার (২৫ জানুয়ারি) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা কমিটির বৈঠকে তাদেরকে এ শাস্তির সুপারিশ করা হয়। পর সিন্ডিকেটের বিশেষ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে সুপারিশটি আমলে নিয়ে তাদেরকে বহিষ্কারাদেশ দেয় সিন্ডিকেট।


এর আগে সোমবার (২৪ জানুয়ারি) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় সুমাইয়া ৪৪ ব্যাচের এক ছাত্রকে থাপ্পড় মারে ও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে। পরে ভুক্তভোগী ওই ছাত্র রাত বারোটার দিকে প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়ে বিচার দাবি করেন।


ওই রাতেই প্রক্টর অফিসে উভয় পক্ষ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের লিখিত সাক্ষ্য নেওয়া হয়। পরে এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করে। প্রক্টর অফিসে উপস্থিত প্রশাসনিক ও শিক্ষক সমিতির নেতারা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিষয়টির সুরাহা করার প্রতিশ্রুতি দেন।


প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষ্য থেকে জানা যায়, মারধরের শিকার শিক্ষার্থী দুজন বান্ধবীসহ ৫ জন বটতলার রাস্তা ধরে হাঁটছিলেন। তখন সুমাইয়া তাদের পেছন থেকে সাইড দিতে বলে। এতে ওই ছাত্র ‘আপু, রাস্তার তো ৭০ ভাগ জায়গা খালি আছে।’ এ কথা বলার পর সুমাইয়া উচ্চবাচ্য শুরু করে গালমন্দ করতে থাকেন।


ঘটনাস্থলে উপস্থিত একাধিক শিক্ষার্থী আরও জানান, এ ঘটনার আধা ঘণ্টা পর সুমাইয়ার একটি ছেলে বন্ধু (বিএফ) লাঞ্ছিত শিক্ষার্থীদের ডেকে বিষয়টি সমাধান করার চেষ্টা করেন। তাদের কথা বলার এক পর্যায়ে সুমাইয়া একটি দোকান থেকে তেড়ে এসে ওই ছাত্রকে থাপ্পড় দেন এবং উচ্চবাচ্য করতে থাকেন। তখন আশেপাশের শিক্ষার্থীরা উত্তেজিত হয়ে সুমাইয়াকে নিবৃত্ত করতে চাইলে সে একটি দোকানে আশ্রয় নেয়।


পরে সেখানে সাধারণ শিক্ষার্থীরা জড়ো হতে থাকলে প্রক্টরিয়াল টিম উভয় পক্ষকে প্রক্টর অফিসে নিয়ে লিখিত সাক্ষ্য নেয়।


এ বিষয়ে সুমাইয়া বিনতে ইকরাম তার লিখিত বক্তব্য বলেন, রাস্তায় সাইড চাইলে তারা আমাকে উদ্দেশ্য করে আক্রমণাত্মক অঙ্গভঙ্গি করে এবং আমাকে নেশাগ্রস্ত বলে সম্বোধন করে। তখন আমি এর প্রতিবাদ জানাই।


ভুক্তভোগী ছাত্র বলেন, এটি সত্যিই লজ্জার ও দুঃখজনক ঘটনা। আমরা প্রিন্টের কাজে যাচ্ছিলাম। তখন মেয়েটি উচ্চস্বরে সাইড চাইলে আমি বলি- ‘আপু রাস্তার তো ৭০ ভাগ জায়গাই খালি আছে।’ এই কথার জবাবে সে চিৎকার চেঁচামেচি করতে থাকে। কিছুক্ষণ পরে তার প্রেমিক বিষয়টি সমাধান করতে ডাকলে মেয়েটি হঠাৎ করে আমাকে থাপ্পড় মেরে বসে।


এ বিষয়ে রেজিস্ট্রার রহিমা কানিজ বলেন, রাতে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের জরুরি সভায় থাপ্পড় ও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করায় সুমাইয়াকে এক বছর এবং গালিগালাজ করা ও মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়ায় আনিকাকে ছয় মাসের জন্য বহিষ্কার করা হয়। তারা দুজনই এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে প্রবেশ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের যে কোনো ধরনের সুযোগ-সুবিধা থেকে বিরত থাকবে। 

ads

Our Facebook Page